সংবাদ ডেস্ক : ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিভিশন মামলা খারিজ করেছেন আদালত। তালাক যথাযথভাবে হয়নি জেনেও তামিমা সুলতানাকে বিয়ে করার অভিযোগে ওই মামলা করা হয়। ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) এই আদেশ দেন। ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আবুল কাসেম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নাসির ও তামিমার রিভিশন মামলা খারিজ করেছেন আদালত। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলা চলতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তাঁর স্ত্রী তামিমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
তবে মামলা থেকে তামিমার মা সুমি আক্তারকে অব্যাহতির আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে ক্রিকেটার নাসিরের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ আদালতে বলেছিলেন, তামিমার সঙ্গে মামলার বাদী রাকিবের তালাক কার্যকর হয় ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল। আর নাসির তামিমাকে বিয়ে করেন এর চার বছর পর। সুতরাং নাসিরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ টেকে না।
আর তামিমা আইন মেনে রাকিবকে যথাযথভাবে তালাক দিয়েছেন, তালাক কার্যকর হয়েছে। তালাকের নোটিশ দেওয়ার দায়িত্ব কাজী অফিসের। তামিমার মায়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগও সঠিক নয়। পরে ক্রিকেটার নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান। তিনি আদালতকে বলেছিলেন, আসামিপক্ষ থেকে ২০১৭ সালে রাকিব ও তামিমার মধ্যে তালাক কার্যকর করার কথা সঠিক নয়। তামিমা ২০১৮ সালের পাসপোর্টে স্বামীর নাম হিসেবে রাকিবের নাম উল্লেখ করেন। জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন আসামিরা।
এ মামলায় ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর নাসির, তামিমা ও সুমি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। সেদিন আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছিলেন।
আর ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নাসির, তামিমা ও সুমির বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আদালত সেদিন পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নেন। এ ছাড়া মামলার তিন আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ বলেন, তালাক যথাযথভাবে হয়নি জেনেও ক্রিকেটার নাসিরের তামিমাকে বিয়ে করার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ডাক বিভাগের মাধ্যমে তালাকের নোটিশটিও ঠিক নয়। এখানে জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। তালাক না হওয়ার তথ্য জানা সত্ত্বেও তালাক হয়েছে, এমন তথ্য প্রচার করায় নাসির, তাঁর স্ত্রী তামিমা ও তামিমার মা সুমির বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে প্রতিবেদনে।
২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় নাসির ও তামিমার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এরপর নতুন করে বিতর্ক ওঠে এই ক্রিকেটারকে ঘিরে। তামিমা তাঁর আগের স্বামীকে তালাক না দিয়ে নাসিরকে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মামলা করেন তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসান।
Leave a Reply