বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি ভোটে যাবে কি না- দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন প্রশ্নে ‘না’ বলেছেন নেতা-কর্মীরা। তাদের ‘মতামত পেয়ে’ পরে বিএনপি নেতা বলেন, ‘তামাশার’ নির্বাচন হতে দেবে না জনগণ।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার(৪ মার্চ) সারা দেশের থানায় থানায় ‘নীরব পদযাত্রা’ করে বিএনপি।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকালে উত্তরা পূর্ব থানার আউয়াল এভিনিউ সড়কে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন ফখরুল। এরপর হয় পদযাত্রা।
“এই সরকারের অধীনে কি আবার নির্বাচনে যাব?”- বক্তৃতার সময় নেতা-কর্মীদের কাছে জানতে চান ফখরুল। জবাবে চিৎকার করে সবাই বলেন, “না”।
ফখরুল বলেন, ‘‘মানুষ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। সবার আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।
“তবেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের মাধ্যমেই জনগণের একটা পার্লামেন্ট, জনগণের একটা সরকার গঠন করতে হবে।”
‘‘আপনারা সবাই কি একমত?” ফের প্রশ্ন রাখেন বিএনপি নেতা।
“হ্যাঁ” ফের একসঙ্গে চিৎকার করে নিজেদের অবস্থান জানান কর্মীরা।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে যায় বিএনপি ও তার জোট। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে হয় ৫ জানুয়ারির ভোট। এর আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান দেড়শরও বেশি সংসদ সদস্য।
২০১৮ সালের নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা ছিল বিএনপির। তবে ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামে আরও একটি জোট গঠন করে ভোটে যায় তারা। দুই জোট মিলে আসন পায় কেবল ৮টি।
সেই নির্বাচনে ‘আগের রাতেই’ ভোট হয়েছে, এমন একটি অভিযোগ তুলে তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ফিরেছে বিএনপি। জোট ভেঙে গিয়ে গড়ে তুলতে চাইছে ‘যুগপৎ আন্দোলন’।
তবে সংবিধানের বাইরে যাবে না আওয়ামী লীগ। এমনকি বিএনপিকে ভোটে আনতে বাড়তি উদ্যোগ না নেওয়ার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফখরুল মনে করেন, আওয়ামী লীগ এবার ভোট করতে পারবে না।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ মনে করেছে যে, তারা এভাবে গত দুইটা নির্বাচন করেছে। এবারও ওইভাবে নির্বাচন করে নিয়ে যাবে। আবার সেইভাবে জনগনকে শোষণ করবে, জনগণের সম্পদ লুট নিয়ে যাবে। মানুষ এটা হতে দেবে না। মানুষ রাস্তায় নেমেছে, আন্দোলনের পর আন্দোলন হচ্ছে।
“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সেই আন্দোলনকে সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এবার আমরা সেই তামাশার নির্বাচন হতে দেব না, এ দেশের মানুষ হতে দেবে না।”
‘শান্তিপূর্ণভাবে’ আন্দোলন চালিয়ে নিতে নেতা-কর্মীদেরকে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের এই আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। আমাদের এই আন্দোলন জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন, আমাদের এই আন্দোলন কথা বলার যে অধিকার, সেই অধিকার ফিরে পাওয়ার আন্দোলন।”
আন্দোলনে বাধা দিলে প্রতিরোধের ঘোষণাও দেন ফখরুল।
১০ দফা দাবিসহ নানা দাবিতে আগামী ১১ মার্চ ঢাকাসহ মহানগর ও জেলায় মানববন্ধনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি।
Leave a Reply