অর্থনৈতিক কূটনীতি আরও শক্তিশালী করতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কূটনীতিকদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার নির্দেশ দিয়েয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার পাশাপাশি আপনাদের (কূটনীতিকদের) অর্থনৈতিক কূটনীতিকে শক্তিশালী করতে সক্রিয় হতে হবে।’ স্থানীয় সময় সোমবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় কাতারে তার বাসভবনে কূটনীতিকদের নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে যাচ্ছে। এজন্য সেসব দেশের প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন, যেখানে বাংলাদেশ ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে লাভবান হতে পারে।’
বাণিজ্য ও রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশের স্নাতক বজায় রাখতে অর্থনৈতিক কূটনীতি জোরদারে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাকে চোখ খোলা রেখে সব দেশের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতা করতে হবে। তাহলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা টিকে থাকতে পারবো, আরও এগিয়ে যেতে ও উন্নত দেশ হিসেবে উত্তোরণ হবো।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন কূটনীতি একটি রাজনৈতিক বিষয় ছিল। কিন্তু এখন এটি অর্থনৈতিক বিষয়, মানে অর্থনৈতিক কূটনীতি। তাই যারা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন, তাদের সেই দেশগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে, যেখানে আমরা বাণিজ্য ও ব্যবসা করতে পারি। একইসঙ্গে যেসব দেশে আমাদের পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে এবং যে দেশগুলো থেকে আমরা কম এবং ন্যায্য দামে পণ্য আমদানি করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যবসা ও বাণিজ্য আরও বাড়াতে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যেসব দেশে আমাদের পণ্যের চাহিদা আছে এবং যেখানে বিপণনের সুযোগ আছে, সেসব দেশকে চিহ্নিত করুন’।
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বাংলাদেশের নীতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির মূলভিত্তি হচ্ছে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। অন্তত আমি দাবি করতে পারি যে, বাংলাদেশ সঠিকভাবে এ নীতি অনুসরণ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। কিন্তু যখন কোনো অন্যায় দেখা যাবে, তখন বাংলাদেশ অবশ্যই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে কথা বলবে, যা মিয়ানমারকে এখন বলা হচ্ছে। যখন মিয়ানমারে ঘটনাটি ঘটেছিল (রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন), তখন আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়িনি। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
কূটনীতিক সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘের পঞ্চম স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী এখন কাতার সফরে রয়েছেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল সানি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে তিনি গত শনিবার (৪ মার্চ) কাতারে পৌঁছেন। বুধবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
Leave a Reply