ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার ইসলামিক বক্তার জিহ্বা কেটে হত্যাচেষ্টা মামলার ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার(৮ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব ৯ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মমিনুল হক।
র্যাবের দাবি—ভুক্তভোগী ইসলামী বক্তার ওই দিনের বক্তব্যের কিছু অংশ গ্রেপ্তারকৃতদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে না হওয়ায় তাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মৃত হেলিম ভূঁইয়ার ছেলে জাকির হোসেন জাক্কু (৪৮), একই গ্রামের আমির আলী ভূঁইয়ার ছেলে মাহবুবুল আল শিমুল (৩৩), একই উপজেলার দৌলতবাড়ি চাওড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সুমন (৩৫), কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার বিংলা বাড়ির গ্রামের মৃত শেবু মিয়ার ছেলে আমিরুল ইসলাম রিমন (২০)।
র্যাবের অধিনায়ক মমিনুল হক বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছে ইসলামী বক্তা শরীফুল ইসলাম নুরীর ওই দিনের বক্তব্যের কিছু অংশ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। এ জন্য তারা মাহফিল শেষে রাতে বাড়ির ফেরার পথে হামলা করে জিহ্বা কেটে নেয় এবং কুপিয়ে জখম করে।’
র্যাব কর্মকর্তা মমিনুল হক আরও জানান, গত রোববার রাতে ইসলামী বক্তা হযরত মাওলানা মুফতি শরীফুল ইসলাম নুরী (৩৮) জেলার বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ি দরবার শরীফের মাহফিল শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউপির রামধননগর রেলক্রসিং পাকা রাস্তার ওপর গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা তাঁর ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। এ সময় তাঁরা ভুক্তভোগীর সঙ্গে থাকা লোকেদের ওপর হামলাসহ ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর চাচা বাদী হয়ে আখাউড়া থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের আখাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের থানায় হস্তান্তর করেছ র্যাব। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে তাদের জেলা আদালতে পাঠানো হবে।’
এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের মাহফিলে বক্তা হিসেবে বয়ান করেন শরীফুল। মাহফিল শেষে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে রাত সোয়া ১২টার দিকে আখাউড়ার রামধননগর গ্রামে পৌঁছানোর পর দুর্বৃত্তরা গতিরোধ করে। মামলার প্রধান আসামি রায়হান বাঁশ দিয়ে শরীফুলের মুখে আঘাত করেন। এতে তার জিহ্বার সামনের অংশ সামান্য কেটে যায়। ২ নম্বর আসামি জাক্কু ধারাল অস্ত্র দিয়ে শরীফুলের বাঁ পায়ে আঘাত করেন। পরে তাদের সঙ্গে থাকা অজ্ঞাতনামা অন্য আসামিরা লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে শরীফুলকে গুরুতর আহত করেন। এ সময় শরীফুলের সঙ্গে থাকা সদর উপজেলার খেওয়াই গ্রামের মো. ওবায়দুল্লাহকেও (৩৪) মারধর করা হয়। পরে আসামিরা শরীফুলের মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন। মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং শরীফুল ও ওবায়দুল্লাহর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। আহত শরীফুল ও ওবায়দুল্লাহকে উদ্ধার করে প্রথমে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শরীফুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
Leave a Reply