নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙ্গুনিয়া থানাধীন ১২নং কোদালা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য এবং তার ছেলের নেতৃত্বে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা যতীন্দ্র লাল আঁকুড়ের পরিবার। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিতা-পুত্র সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে এই অসহায় মুক্তযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলা ও লুটপাট চালায়। এসময় মুক্তিযুদ্ধা যতীন্দ্র লাল আঁকুড়ের স্ত্রী ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা কমলা আঁকুড়ের উপরও হামলা চালালে তার মাথা ফেটে যায়। এই ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়।
জানা যায়, গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা যতীন্দ্রের ছেলে রুবেল, মেয়ে নিপা এবং নিপার স্বামী স্বপন সিএনজিযোগে শিলক বাজার যাওয়ার পথে তাদের গতিরোধ করে ১নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য শ্রী প্রসাদ দাশ এবং তার ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার জয় দাশের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী মারধর করে রুবেলের ব্যবহৃত স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় তাদেরকে বহনকারী সিএনজি গাড়ীও ভাংচুর করা হয়। এই ঘটনার পরে সন্ধ্যায় উক্ত হামলাকারীরা তাদের উপর আবারো হামলা চালায়। হামলায় রুবেল, নিপা, স্বপন, বৃদ্ধা কমলাসহ অনেককে গুরুতর জখম করা হয়। এসময় তারা ব্যাপক লুটপাটও চালায়। এই ঘটনার পরেও তারা ক্ষান্ত হননি, পরদিন শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ২ টার দিকে রুবেলের বেডরুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে স্বর্ণালংকারসহ নগদ টাকা এবং বিভিন্ন জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা ঘরের ভেতর সবাইকে আটকে রাখে, পরবর্তীতে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে হামলা ও লুটপাটের সময় ইউপি সদস্য শ্রী প্রসাদ দাশ নিজের দলের লোকের আঘাতে আহত হলেও উল্টো উক্ত ঘটনার দায় ভিকটিমদের ওপর চাপানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর বর্বর হামলা চালানো হলেও প্রসাদের উপর হামলার অভিযোগ এনে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে চিকিৎসা সেরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা যতীন্দ্র আঁকুড়ের পুত্রবধূ পূঁজা আকুড়ে বাদী হয়ে ১নং ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত ইউপি সদস্য শ্রী প্রসাদ দাশকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের বিরুদ্ধে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মুক্তিযুদ্ধা যতীন্দ্র লাল আঁকুড়ের স্ত্রী ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধা কমলা আঁকুড়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রশ্ন রেখে বলেন, আমার স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেও যদি তার পরিবারের উপর এমন হামলার ঘটনা ঘটে তাহলে কি লাভ আর যুদ্ধ করে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের বিচার চাই। এই ধরনের সন্ত্রাসী ইউপি সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হউক।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উভয়পক্ষ মারামারি করেছে। উভয়পক্ষে মামলা নেওয়া হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলতেছে।
Leave a Reply