রমজান মাসে ইফতার পার্টি না করে সেই অর্থ দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধামন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এই অনুরোধ জানান।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এর আগে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
একই সঙ্গে ৮ বিভাগে কৃষিপণ্যের জন্য আধুনিক সংরক্ষণাগার নির্মাণ করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ একটা আবেদন জানিয়েছেন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে ইফতার পার্টি না করার জন্য একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যারা আগ্রহী বা যাদের সাধ্য আছে তারা যেন সাধ্য অনুযায়ী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ায়। ইফতার পার্টির যে টাকা সেটি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়।’
তিনি বলেন, ‘আরও দুটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমবায় নিয়ে একটি স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্নের আলোকে যাতে কৃষিভিত্তিক সমবায় গড়ে তোলা যায়, সে জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং পল্লী উন্নয়ন বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন।’
মাহবুব হোসেন বলেন, আট বিভাগে পর্যায়ক্রমে কৃষি পণ্য সংরক্ষণাগার তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাতে আমাদের বিভিন্ন কৃষিপণ্য অফ সিজনে দাম বেড়ে যায় বা সংরক্ষণের সুযোগ আমাদের কম থাকে, এ জন্য খুব আধুনিকতম সংরক্ষণাগার তৈরির করতে বলেছেন তিনি। সেখানে ভিন্ন ভিন্ন চেম্বার থাকবে। যে পণ্যের জন্য যে ধরনের তাপমাত্রা মেইনটেন করতে হবে, সেটি মেইনটেন করে যাতে দীর্ঘ মেয়াদে এই পণ্যগুলো রেখে বাজারের এর সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায় সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এগুলো মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে ফলোআপ করব।’
রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে কোন মন্ত্রণালয় কী করছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তিন মন্ত্রণালয় কী কী করেছে তা জানিয়েছে। যেমন-মৎস্য মন্ত্রণালয় থেকে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মাছ ও মাংস বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে বাজার মনিটিং কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে যে, বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি ঢাকা শহরে এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য জায়গায় মিলগেটে যে রেট সেই রেটে তারা তাদের পণ্য বিক্রি করবে। মাঝখানে অনেক হাত হয়, সে জন্য মিলগেটে নিজ উদ্যোগে তেল, ডাল, চিনি বিক্রি শুরু করেছে এবং এটির পয়েন্ট আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন।’
এডিবির সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ পুষ্কর শ্রীবাস্তব বলেন ‘প্রকল্পটি এডিবি অর্থায়নকৃত সাউথওয়েস্ট এরিয়া ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার রিসোর্স প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্টের অন্তর্ভুক্ত। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যতা কমানোর পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বাড়াবে। বিশেষ করে নারী ও দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই জীবিকা নিশ্চিতে সহায়তা করবে।’
প্রকল্পটির মাধ্যমে ৬ লাখের বেশি মানুষ উপকৃত হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পটি সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার উন্নয়ন ও প্রসার ঘটাবে। পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অন্যান্য সামাজিক পরিকাঠামো নির্মাণ করবে।’
এছাড়া প্রকল্পটি বাংলাদেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে, কার্যক্রম তদারকি করতে এবং এসব সংস্থার ক্রিয়াকলাপে জলবায়ু অভিযোজনকে সংহত করতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতাও বাড়াবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply