শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মাধ্যমে নৌ-সেক্টরে সকল জাহাজ শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা শাখা, চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষ থেকে ১১ দফা অমিমাংসিত দাবী শ্রম মন্ত্রণালয়ে মাননীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আগামী ৩০মে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আহুত সভায় পরিপূর্ণ কার্যকর, বাস্তবায়ন ও নৌ-সেক্টরে চলমান সংকট সমাধান এর দাবীতে (২৪ মে) শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় কর্ণফুলী নতুন ব্রীজ চত্বরে নবাবীয়ানা রেস্তোরাঁ হল রুমে চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.আসগর হোসেন তালুকদার এর সভাপতিত্বে সদস্য হাফেজ শাহাদাত হোসেন মাষ্টার ও রেজাউল করিম সেলিমের সঞ্চালনায় সভায় ১১ দফা দাবীর বিষয়বস্তু তুলে ধরেন বক্তাগণ। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম মনিরুল ইসলাম মাষ্টার। তিনি বলেন ১১দফায় শ্রমিকদের রুটি রুজি সহ ন্যায় সঙ্গত অধিকারের কথা বলা হয়েছে। প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি এম. নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন শ্রমিকদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, আমাদের কে নিয়ে ষড়যন্ত্রের দাবার গুটির চাল আর খেলতে দেওয়া হবে না। যতক্ষণ দাবি মেনে নেওয়া হবে না ততক্ষণ ছাড় নেই। ৩০ মে’র মধ্যে আমাদের ১১দফা দাবি মেনে নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসবে, সেজন্যে সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা আবু তাহের মাষ্টার, মোহাম্মদ আলী মাষ্টার, শহিদুল ইসলাম ড্রাইভার, শরিফুল ইসলাম মাষ্টার, মো: রমজান আলী মাষ্টার, মারুফ হোসেন মাষ্টার, মানিক বাসার, বাবুল ড্রাইভার, শরীফ সুকানী, রানা মাষ্টার, দেলোয়ার হোসেন ড্রাইভার, সোহেল মাষ্টার।
জাহাজী শ্রমিকদের পেশকৃত ন্যায্য উক্ত ১১ দফা সমূহের বিবরণ – ১. জাহাজী শ্রমিকদের মালিক কর্তৃক নিয়োগ পত্র, পরিচয় পত্র, সার্ভিস বুক প্রদান ও কল্যাণ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে কন্টিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করতে হবে। ২. গত ৩০ মার্চ ২০২৩ইং এর গেজেট অনুযায়ী বকেয়া পাওনাসহ বেতন পরিশোধ করতে হবে। ৩. মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ ১২ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে। ৪. ভারতগামী জাহাজী শ্রমিকদের ভারতের সীমানার ল্যান্ডিং পাস, পোর্ট ভিসা ও সুচিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। ৫. বালুবাহী বাল্কহেড শ্রমিকদের উপর নৌ-প্রশাসনের হয়রানী, মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে হবে। ৬. নৌ-পথে ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও নৌ-প্রশাসনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ৭. নিরাপদে জাহাজ রাখার পোতশ্রয় নির্মান করতে হবে এবং চরপাড়া সী-বিচ পতেঙ্গা এলাকায় জাহাজের কিনারায় উঠানামার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত ঘাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ৮. মাস্টার, ড্রাইভারশীস পরীক্ষা সহ নৌ-পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ এর সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। ৯. চট্টগ্রামে সিরিয়ালের নামে জাহাজ মালিকদের সৃষ্ট সমস্যা সংকট তাদের নিজেদের ব্যাপার, যা জাহাজ মালিকদেরই সমাধান করতে হবে। ১০. সকল প্রকার জাহাজী শ্রকিকদের জন্য পোতশ্রয় নির্মাণ করে ইজারামুক্তভাবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ১১. বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পেশকৃত ১১ দফার অমিমাংসিত দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা নৌ-যান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মো আলাউদ্দিন মাঝি, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল হোসেন, কার্যকরী সভাপতি মো: নুরুল আলম মাষ্টার, সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মাষ্টার, তৌসির সুকানী, জাফর সুকানী, মো: হারুন রশিদ মাষ্টার, জামাল সুকানি, মো: রাজু, রেদোয়ান সুকানী, সত্তার সুকানি, ইব্রাহিম, আবু মনছুর, পতেঙ্গা থানা জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো: হাছান বাদশা, কোষাধ্যক্ষ তুহিন, সদস্য রবিউল আলম রবি, জেলা কমিটর সহ সভাপতি মো: ইদ্রিছ মোল্লা, রফিক সারাং, ইয়াছিন, সোহাগ, মৌলানা নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন উল্লেখিত দাবি গুলো সরকার এবং মালিক পক্ষ বারংবার মেনে নেওয়া আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করছে তাদের আশ্বাসে শ্রমিকরা আন্দোলন থেকে সড়ে দাড়াঁলে তাদের আর এই বিষয়ে হুশ থাকে না। তাই এবার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
Leave a Reply