রোববার (১লা সেপ্টেম্বর) বিলুপ্ত করা হয় দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক কমিটি। এতেই নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি। এই মূহুর্তে কারা হাল ধরছেন এবং কোন ধরণের নেতার উপর আস্থা রাখবেন দলের হাই কমান্ড সেই বিষয়টি আলোচনায় দলটির তৃণমূলে। যেকোনো মুহূর্তেই ঘোষণা হতে পারে নতুন কমিটি। তাই স্বাভাবিকভাবে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে দলের তৃণমূলে আছে নানা আলোচনা।
পদ প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ ছুটছেন কেন্দ্রে। পদ পেতে ধর্না দিচ্ছেন সিনিয়র নেতাদের কাছে। চেষ্টা করছেন দলের হাই কমান্ডের কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে। সম্ভাব্য কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া এমন অনেক নেতা থাকলেও এগিয়ে আছেন ডজনখানেক। সম্ভাব্য কমিটির নেতৃত্ব আসতে পারে এদের মধ্য থেকে।
তৃণমূলের প্রত্যাশা এবার ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে দক্ষিণে রাজনীতি করেছেন এমন কাউকেই চান তারা। এছাড়া দলটির তৃণমূল কর্মীদের প্রত্যাশা, দলের বিগত ‘আন্দোলন–সংগ্রামে’ যারা সক্রিয় ছিলেন তারাই নেতৃত্বে আসুক। সামনে বিএনপির সুদিন আসছে। যারা আন্দোলন–সংগ্রামে ছিলেন, মাঠে–ময়দানে সক্রিয় আছেন, যারা আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা–মামলার শিকার হয়েছেন তাদের মূল্যায়ন করা হোক। বিগত সময়ে যারা মামলার শিকার হয়নি তাদের বিএনপি করারও অধিকার নেই। কারণ আন্দোলনে থাকলেই মামলার শিকার হতেন তারা।
সভাপতি বা আহবায়ক পদে এগিয়ে আছেন, জেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন, সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আলী আব্বাস এবং সাবেক সহ–সভাপতি আলহাজ্ব ইদ্রীস মিয়া।
সাধারণ সম্পাদক বা সদস্য সচিব পদে আলোচনায় আছেন জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম–আহবায়ক লেয়াকত আলী, বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম হোছাইনী, বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ও আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক(২০১৮ সালে মনোনয়ন প্রাপ্ত) আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান, বিলুপ্ত কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ও আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক (ভিপি) এবং আনোয়ারা উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য সচিব লায়ন মো. হেলাল উদ্দিন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছিল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র কমিটি। ঐসময় জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি ও শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। যা স্বয়ং দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অনুমোদনও দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের এপ্রিলে আবারো পুর্নগঠন করা হয়। সেবার জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি ও গাজী শাহজাহান জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক ও শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দীনকে সহ–সভাপতি করা হয়। ৩ বছরের জন্য গঠিত এ কমিটি ৮ বছর পাঁচ মাস দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভেঙে দেয়া হয়।
একই বছরের ২রা অক্টোবর মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র তৎকালীন সিনিয়র সহ–সভাপতি আবু সুফিয়ানকে আহ্বায়ক এবং বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি’র তৎকালীন সভাপতি মোস্তাক আহমেদ খানকে সদস্য সচিব করে দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৭ মে কমিটির ৪ নং সদস্য এনামুল হক এনামকে কমিটির ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। আহ্বায়ক কমিটি গঠনের সময় বলা হয়, গঠিত কমিটির মেয়াদ হবে তিন মাস। তারা এই তিন মাসের মধ্যে দক্ষিণ জেলার আওতাভুক্ত প্রতিটি উপজেলা, থানা ও পৌরসভার কমিটি গঠন শেষে দক্ষিণ জেলার কাউন্সিল আয়োজন করবেন। কিন্ত ৪ বছর ১১ মাস দায়িত্ব পালন করেও কাউন্সিল করতে পারেনি।
Leave a Reply