নিজস্ব প্রতিবেদক : যৌন নিপীড়নের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের পর কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বুধবার(৪ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর চকবাজার ওয়ার্ডে অবস্থিত বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন তিনি।
এ সময় মেয়র শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনেন, তাদের সান্ত্বনা দেন। পরে তিনি শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোমা বড়ুয়া, চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনুসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় রেজাউল করিম বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষককে ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। আসলে ওই ব্যক্তিকে এখানে নিয়োগ দেওয়া ঠিক হয়নি। নিয়োগ যেভাবেই হোক না কেন, তার চিন্তার সংশোধন হবে। তবে অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে।’ বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সিটি মেয়র বলেন, ‘এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যদি আগে কেউ অভিযোগ দিত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।’ তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থায়ী কমিটিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সিটি করপোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘কারো বিরুদ্ধে যদি এরকম কোনো অভিযোগ, ত্রুটি-বিচ্যুতি পাই অথবা লোকমুখে এরকম কিছু শুনতে পাই— তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব। সে যে-ই হোক না কেন। শুধু শিক্ষকদের নয়, নৈতিকতার প্রশ্নে কর্মচারীদেরও ছাড় দেওয়া হবে না। এছাড়া শিক্ষকরা যদি দলাদলিতে জড়ায়, সেক্ষেত্রে বদলি নয়, সরাসরি বরখাস্ত করা হবে।’
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনকে বরখাস্তের খবর শোনার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নিপীড়নের কথা সবাই জানতো। কিন্তু ভয়ে কেউ কিছু বলতো না। স্কুল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া এবং ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিনি এসব করতেন।’
গত ১ জানুয়ারি যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে ছাত্রীরা। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। পরে তাকে সরিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে ছাত্রীরা আন্দোলন থেকে সরে আসে। ওইদিন তাকে সিটি করপোরেশন পতেঙ্গার আরেকটি বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। পরে ঘটনাটি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২রা জানুয়ারি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ২০১৩ সালে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে ২০১৮ সালে ফের একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
Leave a Reply