সংবাদ ডেস্ক: বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভর্তুকি সমন্বয় করতে বিদ্যুতের মূল্য শতকরা ৫ ভাগ সমন্বয় করা হয়েছে। লাইফ লাইন গ্রাহকদের ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সার স্থলে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা দিতে হবে অর্থাৎ ইউনিট প্রতি ১৯ পয়সা বাড়বে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পর প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের স্বল্পতার কারণে আমদানিকৃত তরল গ্যাসের ব্যাপক ব্যবহার, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মানের অবমূল্যায়নের ফলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য প্রায় ২০ ভাগ বৃদ্ধি করে। বিতরণ কোম্পানিগুলো পাইকারি পর্যায়ে প্রায় ২০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে তাদের আর্থিক ক্ষতি পূরণের জন্য অন্তত ১৫ দশমিক ৪৩ ভাগ খুচরা/ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির জন্য আবেদন করে। দেশের সার্বিক আর্থিক অবস্থার বিবেচনায় বিতরণ কোম্পানিগুলোর আবেদনের বিপরীতে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৫ ভাগ সমন্বয় করা হয়েছে।’
গ্রাহক পর্যায়ে প্রতি ইউনিটে (প্রতি কিলোওয়াট) বাড়ল ১৯ পয়সা। দাম বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম সাত টাকা ৩২ পয়সা করা হয়েছে। যা আগে ছিল সাত টাকা ১৩ পয়সা।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। চলতি জানুয়ারি থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরো বলা হয়, আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে বেড়ে ৩ টাকা ৯৪ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুতের দাম ৪ টাকা ১৯ পয়সা থেকে বেড়ে ৪ টাকা ৪০ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৫ টাকা ৭২ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ব্যবহারকারোদের ৬ টাকা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৩০ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের জন্য ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে বেড়ে ৬ টাকা ৬৬ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের জন্য ৯ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বেড়ে ১০ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ১১ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে বেড়ে ১২ টাকা ৩ পয়সা করা হয়েছে।
এর আগে গত ২১ নভেম্বর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। একই মাসে গ্রাহক পর্যায়ে ২০ থেকে ২৩ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় দেশের ছয়টি বিতরণকারী কম্পানি। এই প্রস্তাবের ওপর গত রবিবার বিইআরসি গণশুনানি করে। শুনানিতে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা প্রতি ইউনিটে ১ টাকা ১০ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহক পর্যায়ে এর আগে সর্বশেষ দাম বেড়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সে সময় বাড়ানো হয়েছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
Leave a Reply