সংবাদ ডেস্ক : ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে আইনসম্মতভাবে আড়ি পাতার ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য একটি ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম লফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম (আইএলআইএস) চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে এই কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রে কোনো ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে প্রচলিত আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িকতাবাদ, জঙ্গিবাদ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখতে দৃঢ় অবস্থান ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দেশ ও সরকারবিরোধী কার্যক্রম বন্ধ করতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে (এনটিএমসি), ওপেন সোর্স ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজির (ওএসআইটি) মতো আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজিত হয়েছে এবং একটি ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম লফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম (আইএলআইএস) চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, আইএলআইএস হচ্ছে আইনসম্মতভাবে নজরদারির ব্যবস্থা।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের লিখিত জবাবে এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ন্যস্ত করার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, এনআইডি নিবন্ধন বিশ্বের প্রায় সব দেশেই নির্বাহী বিভাগের অধীনে হয়ে থাকে। দেশেও এটি নির্বাহী বিভাগের অধীনে হওয়া উচিত। এ কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০০৭ সালে একটি ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির জন্য সেনাবাহিনীর অধীনে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের বাইপ্রডাক্ট হিসেবে এনআইডি কার্যক্রম শুরু হয়। এটি ছিল সাময়িক পদক্ষেপ। তবে এখন এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রমের ব্যাপ্তি অনেক বেড়েছে। এই কার্যক্রম শুধু ভোটার হওয়া বা ১৮ বছরের বেশি নাগরিকের জন্য নয়, বরং সব নাগরিকের জন্য প্রাসঙ্গিক। এছাড়া ব্যাংক হিসাব খোলা, চাকরির আবেদন, সরকারি নানা সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এনআইডি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে ভোটার হওয়ার বিষয় মাত্র একটি।
নীতিমালা দাবি টিআইবির : এদিকে ইসরায়েল থেকে বাংলাদেশ সরকারের নজরদারির বিতর্কিত প্রযুক্তি কেনার বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলনে, ‘জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের ও যোগাযোগের গোপনীয়তা, সুরক্ষা, বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হয় এবং সর্বোপরি ব্যক্তির জীবন ও জীবিকার জন্য হুমকি হতে পারে—এমন প্রযুক্তি কেনা ও ব্যবহারের বিস্তৃতি ও পরিধি সম্পর্কে সরকারের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা জানার অধিকার দেশবাসীর আছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেত্জ-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইসরায়েলের সাবেক এক গোয়েন্দা কমান্ডার পরিচালিত এক কম্পানি থেকে নজরদারির অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কেনে বাংলাদেশ, যা গত বছর জুনে বাংলাদেশে পৌঁছায়।
Leave a Reply