নাহিদ সুলতানা প্রিয়া: চট্টগ্রামে প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে থানার ক্যাশিয়ার পরিচয়ে কোটি টাকা চাদাঁবাজি করছে সোর্স অলি। তার এসব চাঁদাবাজি নিয়ে একাধিক সংবাদ প্রচার করার পরেও সে বহাল তবিয়তে রয়েছে। এখন জনমনে প্রশ্ন উঠেছে অলির চাঁদাবাজিতে আসলেই কি প্রশাসন জড়িত…?
জানা যায়, বন্দরনগরীর চকবাজার, ডবলমুরিং এবং আকবরশাহ থানা এলাকার ক্যাশিয়ার সোর্স অলির চাদাঁবাজির শেষ নেই, এই যেনো দিন -দুপুরে ডাকাতি।
অভিযোগ উঠেছে, পতিতালয় থেকে শুরু করে আবাসিক হোটেল, অবৈধ খোলা তেলের দোকান, মাঝিরঘাট পুড়া তেলের ভাউচার, স্ক্র্যাপের দোকান, সিএসডি গোডাউন, পাহাড়তলী চালের বাজার, বেকারী, অবৈধ জুয়ার বোর্ডসহ বিভিন্ন বৈধ-অবৈধ ব্যবসায় তার বিচরণ চোখে পড়ার মত। এসব জায়গায় সে থানার নাম ভাঙ্গিয়ে করছে চাঁদাবাজি। অলির চাঁদাবাজির পরিমাণ মাসে প্রায় ২৩-২৮ লাখ টাকার বেশী যা বছরে দাঁড়ায় ২ কোটি টাকারও বেশী।এই যেন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।
সোর্স অলি ডবলমুরিং- আকবরশাহ এলাকায় গড়ে উঠা প্রায় ৪০টির বেশী পতিতালয় থেকে মাসে গড়ে প্রায় ৮ – ১০ হাজার টাকা ও ১০টির বেশি অবৈধ আবাসিক হোটেল থেকে প্রায় ১২ – ১৭ হাজার টাকা আদায় করে । চকবাজার, ডবলমুরিং আকবর শাহ এলাকায় গড়ে উঠা ১০০ও বেশী স্ক্র্যাপের দোকান থেকে ৩- ৫ হাজার টাকা করে যা মাসে দাঁড়ায় দেড় লক্ষ টাকার ও বেশী। এইদিকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি করা টাওয়ার ও টাওয়ারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে আসা হয় নাজিরপুল, ধনিয়ালা পাড়া বায়তুর শরফ মসজিদের পাশে চোরাই মালামালের গোডাউনে। এই চোরাই মালামালের গোডাউন চালায় জাবেদ, মোক্তার, মিন্টু, হারুন, ইমরানের ৬ জনের একটি সিন্ডিকেট। সেখান থেকে মাসোহারা হিসাবে অলিকে দেওয়া হয় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ডবলমুরিং আকবরশাহ এলাকায় গড়ে উঠা ১২ থেকে ১৫ টি অবৈধ খোলা তেলের দোকান। যেইখান থেকে মাসোহারা হিসাবে দেওয়া হয়, প্রায় ৩- ৭ হাজার টাকা। এইদিকে মাঝিরঘাট পুড়া তেলের ভাউচার থেকে মাসোহারা হিসাবে দেওয়া হয় প্রায় ১ লাখ টাকা।
ডবলমুরিং সিএসডি গোডাউন থেকে মাসোহারা হিসাবে দেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা।
চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য আসে সরকারি চাল। সেই সরকারি চাউলগুলো অবৈধভাবে চলে যায় পাহাড়তলি চালের বাজারে। প্রতিটি চালান থেকে প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এইদিকে পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে সরকার কিন্তু পাহাড়তলীতে গড়ে ওঠে নিষিদ্ধ গোডাউন। যেখান থেকে মাসোহারা হিসাবে নেওয়া হয় প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা। নাম পরিচয় গোপন রেখে ব্যবসায়ীরা বলেন অলির ডানহাত ও বামহাত হলেন, মামুল ও বাবুল। তারা পুলিশের পরিচয় দিয়ে করছে নানা অপকর্ম। এরা প্রশাসনের সহযোগিতা না থাকলে কিভাবে করছে এইসব। এদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ । টাকা না দিলে পুলিশ দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এছাড়াও চট্টগ্রাম অতিথি কর্মজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি ও ৩ থানার ক্যাশিয়ার খ্যাত সোর্স অলি উদ্দিন গত ১০/২/২০২২ইং তারিখে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালি ১নং চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলেন।নির্বাচনে যদিও হেরে যায়,ঐ নির্বাচনে খরচ করেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
এছাড়া গত ১/০৮/২০১৮ ইং হইতে সমিতির মূল কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০২১ সালের (১৮)৩, ধারা মোতাবেক ৬ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয় এবং ২০ জন শেয়ার হোল্ডার হিসাবে(জনপ্রতি) ১০০টাকা করে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ৬ সদস্য পরিচালনা কমিটিতে মোঃ অলি সভাপতি, এবং ৬ সদস্য অতিথি কর্মজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে সাধারণ সম্পাদক আবদুল কালাম এর অগোচারো সমিতির টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সভাপতি সোর্স অলির স্ত্রী জেসমিন আক্তার এবং মোঃ খলিলুর রহমান নামের দুই সাধারণ সম্পাদক বানিয়ে মাঠ পর্যায়ে টাকা সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেন।
এই ব্যাপারে সমতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল কালাম বলেন অত্র সমতির সভাপতি টাকা আত্মসাৎ করায় আমি আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। তারপর থেকে সমিতির সভাপতি অলি আমাকে হুমকি এবং প্রাণে মেরে ফেলার ভয় ভীতি প্রদর্শন করে আসছেন নিয়মিত। অলিউদ্দিন আমাদের ৩ জনকে আসামি করে মিথ্যা মামলা করেছিলেন আদালতে। মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে সাংবাদিক সন্মেলন করেছিলাম, তারপরেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন দেশের উন্নয়নের দ্বারা অব্যাহত রাখতে এবং অর্জনসহ সমুন্নত রাখতে সরকার দূর্নীতি বিরোধী লড়াই অব্যহত রাখবে। কিন্তু একাধিক সংবাদ প্রচার হবার পরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমরা এই প্রতারক ও চাঁদাবাজ অলির হাত থেকে বাঁচতে চাই।
Leave a Reply