★কোটি টাকার ভবন ১৩ লাখ টাকায় নিলামে দেয়ার অভিযোগ দুদকে
নিজস্ব প্রতিবেদক : নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইমেন্টের মধ্যে পড়া সুলতান আহমদ দেওয়ান ওয়াকফ স্টেটের ৬ তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন দেওয়ান স্কয়ার অবশেষে ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারী) চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অভিযানে ভবনটি খালি করে ভাঙার জন্য নিলাম গ্রহীতাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। তবে ছয় তলা বিশিষ্ট একটি ভবন মাত্র ১৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ায় দুদকসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, নিলাম অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেট কারসাজি করে কয়েক কোটি টাকা দামের ভবনটির প্রকৃত দর উল্লেখ না করে মাত্র ১৩ লাখ টাকায় নিলাম ডেকেছে।
সিডিএ সূত্র জানিয়েছে, নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইমেন্টের মধ্যে পড়ে যায় সুলতান আহমদ দেওয়ান ওয়াকফ এস্টেটের ৬ তলা বিশিষ্ট বাণিজ্যিক ভবন দেওয়ান স্কয়ার। ভবনটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়াকফ স্টেটের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সিডিএ’র এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এ্যালাইমেন্টে পড়ায় ভবনটি ভাঙা জরুরি হয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করে বেশ আগে। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেও সিডিএ ভবনটি ভাঙার ব্যবস্থা করতে পারছিল না। মামলা মোকদ্দমার কারণে সবকিছু জটিল আকার ধারণ করেছিল।
ইতোমধ্যে সিডিএ ভবনটি নিলামে বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করে। গত ৩১ জানুয়ারি টেন্ডার জমা দেয়ার শেষদিন ছিল। নিলামে বেশ কয়েকজন আগ্রহ প্রকাশ করলেও ১৩ লাখ টাকার সামান্য বেশি সর্বোচ্চ দর ওঠে। সিডিএ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে জনৈক মোজাহের সওদাগর বরাবরে অনুমোদন দেয়। মাত্র ১৩ লাখ টাকায় ছয় তলা একটি ভবন বিক্রি করায় সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার অভিযোগ উঠেছে। এতে বলা হয়, কয়েক কোটি টাকা দামের ভবনটি মাত্র ১৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে সরকারকে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কেননা ভবনটি ভাঙ্গার পর ইট, রড, রাবিশ, জিআই পাইপ, রাবিশ, লোহার দরজা- গ্রীল বিক্রির টাকা প্রায়
বিষয়টি নিয়ে সিডিএ’র প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান, প্রকৌশলী সুমন এবং টেন্ডার গ্রহীতা মোজাহের সওদাগরকে বিবাদী করে দুদকে অভিযোগ করা হয়। সংযুক্তি হিসেবে গণপূর্ত বিভাগের ভবনটির ব্যাপারে করা এসেসমেন্টের তথ্য উপাত্তও প্রদান করা হয়েছে।
জানতে চাইলে সিডিএর প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান বলেন, সর্বোচ্চ ১২শ’ স্কয়ার ফুট আয়তনের ভবনটির নিলামে কোন অনিয়ম করা হয়নি। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ভবনটির টেন্ডার করা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতাকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। ভবনটির মূল্য কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে এমনটা ধারণা প্রকাশ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি হাস্যকর। আমাদের কনসালটেন্ট ফার্ম ‘পিডব্লিউডি’ এসেসমেন্ট করে। এখানে দর কম দেওয়া হয়নি, উল্টো বেশী দেওয়া হয়েছে।
ভবনটি থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে বৃহস্পতিবার নিলাম গ্রহীতা মোজাহের সওদাগরকে ভবনটি বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) তাহমিনা আফরোজ চৌধুরীর নেতৃত্বে এই সময় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান, সহকারী প্রকৌশলী মোর্শেদুল হক চৌধুরী, উপ সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, মিথু চৌধুরী প্রমুখও উপস্থিত ছিলেন। ভবন বুঝে নেওয়ার পর তড়িঘড়ি করে ভাঙ্গা শুরু করে ঠিকাদার।
Leave a Reply