সংবাদ ডেস্ক : ফরিদপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগে ভাঙ্গা উপজেলা সদরের এক নারী (৩৩) আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো. সজল মাহমুদ (৪০)। তিনি ভাঙ্গা থানায় সহকারী এএসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেছেন, তিনি অবিবাহিত। তারা দুই বোন ও এক ভাই। মা ও বাবা মারা গেছেন। ২০০৬ সালে তারা দুই বোন জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব যান। ওই সময় তার ছোট ভাই কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তিনি দেশে এসে স্থায়ীভাবে বাড়িতে বসবাস করছেন। গত ২০ অক্টোবর বাড়িতে চুরি হলে থানায় জানান। গত ২৪ অক্টোবর এএসআই মো. সজল রাতে বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার ছলে তাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে খুন ও গুম করার হুমকি দেয়।
বাদী আরো উল্লেখ করেছেন, পরে তাকে বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরে তাকে বিয়ের আশ্বাসে দেখিয়ে ৩০ জানুয়ারি ভাঙ্গা বাজারে নিয়ে একটি মেডিক্যাল সেন্টারে রেখে পালিয়ে যায়। ৩১ জানুয়ারি তিনি এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে বিষয়টি জানান। ওসি মোবাইলে কল করে ওই এএসআইকে ডেকে আনেন। তখন সজল তাকে পুলিশ কোয়ার্টারে নিয়ে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলে। স্বাক্ষর করার পর সজল বলে ‘তুমি আমাকে বিয়ে করেছে এবং তালাক দিয়েছো’। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাকে মারধর করে থানা থেকে বের করে দেয়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন, তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাড়ি এসে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে মামলা করতে গেলে ভাঙ্গা থানা মামলাটি গ্রহণ না করে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই সজল মাহমুদ দাবি করে, ওই নারীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। তার কাছে কাবিননামাও আছে। তার আগের স্ত্রী আছে। বড় স্ত্রীর সম্মতিতে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ওই নারীকে তালাক দেয়নি। এখনও স্ত্রী হিসেবে আছে।
বিস্ময় প্রকাশ করে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও দাবি করে, এ বিষয়ে আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে কেন মামলা দিলেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলালউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, প্রশাসনিক কারণে এএসআই সজলকে গত ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশ লাইন্সে বদলি করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা এখনও পাইনি। তবে শুনেছি, এই ধরনের একটি মামলা হয়েছে।
বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্টের ফরিদপুর সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী বলেন, এ মামলাটি ব্লাস্ট পরিচালনা করবে।
Leave a Reply