নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জমান বলেছেন আসন্ন পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্য নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীকে কোন প্রকার কারসাজি করতে দেয়া হবে না। সেজন্য আমদানিকারক ও উৎপাদককে তাদের পণ্যের সরবরাহ ও বিতরনের দৈনিক তথ্য জেলা প্রশাসনকে প্রদান করতে হবে এবং জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটরা এগুলো মাঠ পর্যায়ে যাচাই করবে।
এছাড়াও জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্টের চলমান কার্যক্রম আরও জোরদার করে চট্টগ্রামে অনিরাপদ খাদ্যের বিপনন বন্ধ, স্বাস্থ্য সেবার ভোগান্তি ও নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত মূল্য আদায়ের মতো ভোক্তা অধিকার লংগনের বিষয়গুলো কঠোরভাবে দমন করা হবে। আর এ কাজে জেলা প্রশাসন ক্যাবসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সার্বিক সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। একই সাথে পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিনের বিরুদ্ধেও সর্বাত্মক সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নগরীর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে বানিজ্যিক রাজধানীখ্যাত চট্টগ্রামে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার দর স্থিতিশীল রাখা, নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় করনীয় নিয়ে ক্যাব চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দের সাথে চট্টগ্রামের নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জমান মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
মতবিনিময় সভায় ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব চান্দগাঁও থানা সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, আকবর শাহ থানা সভাপতি ডাঃ মেসবাহ উদ্দীন তুহিন, সদরঘাট থানা সভাপতি শাহীন চৌধুরী, জামালখান ওয়ার্ড সভাপতি সালাহউদ্দীন আহমদ, পাহাড়তলী থানার হারুন গফুর ভূঁইয়া, পাঁচলাইশ থানার সাধারন সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি আবু হানিফ নোমান, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জমান জানান দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে ভোক্তা অধিকার লঙ্গনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট জোরদার করা হয়েছে। নগরবাসীর যেকোন ভোগান্তি নিরসনে মোবাইল কোর্ট সার্বক্ষনিকভাবে সচল থাকছে। জেলা প্রশাসন ভোক্তা অধিকার লঙ্গন বা যেকোন নাগরিক ভোগান্তি নিরসনে একটি হটলাইন চালু করবে।
তিনি আরো জানান বিগত জানুয়ারি মাসে খাদ্যে ভেজাল আইনে ৩৯টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৬৭টি মামলায় ১৫,৮৭,০০০ টাকা, ওষুধ আইনে ৫টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২৩টি মামলায় ২,২৩,০০০ টাকা, হোটেল অ্যান্ড রেস্টেুরেন্ট আইনে ০৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১টি মামলায় ২,৬৬,০০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আগামিতে এ অভিযান আরো জোরদার করা হবে।
মতবিনিময় সভায় ক্যাব এর পক্ষ থেকে আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় নিত্যপণ্যের বাজার তদারকিতে ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সার্বক্ষনিক দায়িত্ব প্রদান, একটি হটলাইন চালু, মোবাইল কোর্টে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সময়কাল বাড়ানো, অবৈধ পানি, ঘি, বেকারী, মুড়ির ফ্যাক্টরীগুলিতে অভিযান জোরদার করা, পাইকারী ও খুচরা বাজারে বিক্রয় রশিদ প্রদান ও দর যাচাই করা, কাপড়ের দোকানে মূল্য তালিকা লাগানো, ওজনে কম দেয়া রোধে বিএসটিআই এর ভ্রাম্যমান স্কেল দিয়ে ওজন পরিমাপক যন্ত্রগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা, মোবাইল কোর্টে দোকানের কর্মচারীর পরিবর্তে মালিককে শাস্তির আওতায় আনা, রমজানে বৃহৎ আমদানিকারক ও উৎপাদকদের সহযোগিতায় নগরীর গুরুত্বপূর্ন বাজারগুলিতে ন্যায্যমূল্যের দোকান খোলার উদ্যোগ নেবার সুপারিশ করা হয়। জেলা প্রশাসক সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন ও চট্টগ্রামকে ভোক্তা বান্ধব জেলায় পরিনত করতে সকলের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।
Leave a Reply